ভক্তের পরীক্ষা

"ব্রহ্ম হতে কীট-পরমাণু, সর্বভূতে সেই প্রেমময়,
মন প্রাণ শরীর অর্পণ কর সখে, এ সবার পায় ।
বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ?
জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর ।"
                                      - স্বামী বিবেকানন্দ


ঘন মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে উঠল আকাশ
অন্ধকার হইল চারিদিক চারিপাশ
গর্জন সহকারে শুরু হ’ল বারিপাত
সায়মকালে উপস্থিত হ’ল যেন রাত
হেনকালে দিনের শেষে, সারাদিনের মলিন বেশে
রাখাল বালক বাড়ির পানে ছুটতে লাগল উর্দ্ধশ্বাসে
সারদিনের পরিশ্রমে হয়েছিলো সে ক্লান্ত
এমনই সময় অন্ধকারে হ’ল সে দিগভ্রান্ত
চারিদিকে প্রবল ভাবে পড়তে লাগল বাজ
রাখাল ভাবল নেহাৎ-ই তার মরণ আছে আজ
করতে লাগল মনে মনে সে ঈশ্বরকে স্মরণ
“হে প্রভু, বাঁচাও মোরে, দিয়ে দরশন”
চিন্তা মনে, সে কেমনে পৌছবে তার গৃহে...
এমন সময়, কোথা হতে কে, ডাক দিয়ে বলে, “ওহে,
যেওনা আমায় এইখানেতে একলা ফেলে রেখে ।”
“কে? কে?” বলে রাখাল বালক চেঁচিয়ে উঠল ডেকে।
“দেখিতে পাইনে চোখে, আমি অতি বৃদ্ধ, -
সাহায্য করো হে ভাই, হোয়ো না ক্রুদ্ধ ;
গৃহেতে পৌছে তুমি বাঁচাও এ প্রাণ,
ঈশ্বর করবেন তোমার কল্যাণ ...”
রাখাল বালক সবিনয়ে ধরল তার হাত
ক্রমে ক্রমে পেল খঁজে গৃহে যাওয়ার পথ।
বৃদ্ধকে সাথে নিয়ে চলতে লাগল সে...
হঠাৎ-ই পাশ হতে কে উঠল হেসে ,-
চেয়ে দেখে বৃদ্ধ নাই, নাই পাশে কেহ,
অবশ হোয়ে আসে, ভয়েতে তার দেহ,
দৈববাণী শোনা গেল, “ওহে স্নেহময়! 
সম্মুখে তাকাও তুমি, নাই কোনো ভয়
তোমার কাজেতে আমি হয়েছি তুষ্ট
তোমার আর থাকবেনা কোনো কষ্ট ।”
সামনে তাকিয়ে রাখাল হ’ল বিস্মিত
দূর হ’ল মনে তার দুঃখ ছিল যত
সম্মুখে দেখিল সে দেবতা মহান
নররূপে করেন যিনি জগৎ কল্যাণ,
“খুশি মনে গৃহে যাও, নাই কোনো ভয়
তোমার জীবন হোক আনন্দময়
এভাবেই কোরি আমি জগৎ এ বিরাজ
পেতে হোলে মোর কৃপা, কোরো ভালো কাজ
জীবের সেবাতে হও নিবেদিত প্রাণ
মনে রেখো জীবেতেই আছেন ভগবান ।।”

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

No comments:

Post a Comment